
নেপালে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানী কাঠমান্ডুর বালুয়াটায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠক চলাকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেন।
বৈঠকে উপস্থিত এক মন্ত্রীর বরাত দিয়ে জানা গেছে, সংঘর্ষে ১৯ জনের মৃত্যু ও চার শতাধিক মানুষের আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রমেশ লেখক নৈতিক দায় নিয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।
আজ সকালে কাঠমান্ডুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়। সরকার ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ মোট ২৬টি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বন্ধের ঘোষণা দেয়ার পর বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। একপর্যায়ে কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের ব্যারিকেড অতিক্রম করে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। এতে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জলকামান, টিয়ার শেল ও গুলি ছোড়ে। এতে কাঠমান্ডুতে ১৭ জন এবং ইতাহারি শহরে ২ জন নিহত হন। আহত হন আরও চার শতাধিক।
এ ঘটনার পর নেপালের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গগন থাপা ও বিশ্ব প্রকাশ শর্মা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। তাঁদের মতে, নৈতিক দিক থেকে এ পদক্ষেপ জরুরি ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হয়। এর পর থেকেই জনমনে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। গতকাল রোববার সাংবাদিকদের একটি অংশ সরকারবিরোধী অবস্থান নিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ জানান।
আজ সকাল ৯টা থেকে ‘হামি নেপাল’ নামে একটি সংগঠনের আহ্বানে দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়। এতে অংশ নেয় বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণী, যাঁদের বেশিরভাগই জেনারেশন জেড (১৯৯৭–২০১২ সালে জন্মগ্রহণকারী)। তাঁরা শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদই করেননি, সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে জবাবদিহি ও কাঠামোগত সংস্কারের দাবিও জানান।